জন্ম নিবন্ধন যাচাই করুন

জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ থাকলেই অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। আপনার জন্ম নিবন্ধটি অনলাইন হয়েছে কিনা অথবা একটি জন্ম নিবন্ধন অরিজিনাল কিনা সেটি জানতে হলে অনলাইনে চেক করতে হবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি থেক শুরু করে ভোটার আইডি কার্ড এবং পাসপোর্ট করার সময় জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আছে কি-না এবং ইংরেজিতে আছে কি-না জানতে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজন হয়। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইট থেকে নিজে নিজেই অনলাইনে birth certificate check করতে পারবেন। এবং জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে যাচাই করে সেই যাচাই কপি ডাউনলোড করেও ব্যবহার করতে পারবেন।

অনলাইনে birth certificate check করার বিস্তারিত প্রক্রিয়া এবং আপনার সনদ অনলাইনে না দেখানোর কি কি কারণ থাকতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করা হবে। জন্ম নিবন্ধনে ভুল থেকলে সেটি সংশোধন করা উপায় রয়েছে।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা

বিভিন্ন সময় নানা কারনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন: 

  • জন্ম সনদটি ডিজিটাল বা অনলাইন আছে কি-না জানতে।
  • জন্ম নিবন্ধন সনদটি আসল কি-না জানতে।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের সত্যতা যাচাই করা হয়।
  • নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইন করা থাকতে হয়।
  • জন্ম নিবন্ধন টি ইংরেজিতে আছে কি-না জানতে।
  • বিভিন্ন সময় জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন হলে এবং মূল কপি হাতের কাছে না থাকলে, অনলাইনে নিবন্ধন যাচাই করে সার্ভার কপি ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম 

জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে যাচাই করার জন্য https://everify.bdris.gov.bd/ -এই লিংকে ভিজিট করে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ও জন্ম তারিখ লিখুন। তারপর ক্যাপচা (গানিতিক সমস্যার সমাধান) পূরন করে ‘Search’ বাটনে ক্লিক করুন। সকল তথ্য সঠিক থাকলে জন্ম নিবন্ধনের সার্ভারে সংরক্ষিত তথ্য দেখতে পাবেন।

জন্ম নিবন্ধন চেক করতে হলে অবশ্যই ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর লাগবে। জন্ম সনদের নম্বর ১৬ সংখ্যার হলে কিংবা অনলাইনে না থাকলে, তা চেক করতে পারবেন না। তাই প্রথমে জেনে নিন, আপনার জন্ম সনদটি অনলাইন করা কি-না।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কি-না যাচাই

জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইন কি-না যাচাই করার জন্য, ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর লাগে। একজন বাংলাদেশী নাগরিকের জন্ম নিবন্ধনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১৭ সংখ্যার হলে, তা পূর্বেই অনলাইনে সাবমিট করা আছে। কারন, দেশের সকল পুরাতন জন্ম নিবন্ধন গুলো bdris সার্ভারে আপলোড করার সময় ১৭ সংখ্যার করা হয়েছে। 

তবে আপনার জন্ম নিবন্ধনের রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি যদি ১৬ সংখ্যার হয়, তাহলে তা অনলাইনে আছে কিনা যাচাই করে জানতে হবে। সরাসরি ১৬ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে অনলাইনে যাচাই করা যায় না। তাই রেজিস্ট্রেশন নম্বরটির শেষের ৫ ডিজিটের পূর্বে ০ (শূন্য) যুক্ত করে ১৭ ভিজিট নম্বর বানান। তারপর নিম্নোক্ত নিয়মে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কি-না যাচাই করুন:

  • প্রথমে ভিজিট করুন, https://everify.bdris.gov.bd/ – এই লিংকে।
  • অনুসন্ধান পেজে প্রবেশ করলে, আপনার ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর লিখুন। 
  • ২য় ঘরে YYYY-MM-DD (বছর-মাস-দিন) ফরম্যাটে জন্ম তারিখ লিখুন।
  • ক্যাপচা বা গানিতিক সমস্যার উত্তর সর্বশেষ ঘরে লিখুন। 
  • এবার Search বাটনে ক্লিক করুন।

আপনার সনদটি অনলাইনে থাকলে সার্ভারে সংরক্ষিত তথ্য পেজ দেখতে পাবেন। জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইন করা না থাকলে ‘No Result Found’ লেখা আসবে। তাছাড়া জন্ম নিবন্ধনটি ইংরেজি করা না হলে শুধু বাংলা তথ্য থাকবে। আপনার নিবন্ধনটি অনলাইনে থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইটে ভিজিট করে নিজের হাতে থাকা মোবাইল দিয়েই Birth Certificate Check করা যাবে। এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ। এই তথ্যগুলো আপনি আপনার জন্ম সনদে পেয়ে যাবেন।

১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্মতারিখ জানা থাকলে জন্ম সনদ চেক করতে নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করুন:

ধাপ ১: জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইটে প্রবেশ 

জন সনদ যাচাই করার জন্য রেজিস্টার জেনারেল এর কার্যালয়ের, স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করতে হয়। Birth certificate verification এর জন্য একমাত্র সরকারি ওয়েবসাইট হলো bdris.gov.bd। সরাসরি নিবন্ধন যাচাই পেজে প্রবেশ করতে ভিজিট করুন, everify.bdris.gov.bd -এই লিংকে।

bith certificate dtails

এখানে আপনি তথ্য যাচাইয়ের জন্য ৩ টি ঘর সংবলিত একটি ভেরিফিকেশন পেজ দেখতে পাবেন।

ধাপ ২: জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিন

আপনার জন্ম সনদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি লিখুন। এখানে অবশ্যই ১৭ সংখ্যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখতে হবে। রেজিস্ট্রেশন নম্বরটির ১৬ সংখ্যার হলে শেষের ৪ সংখ্যার পূর্বে ০ (শূন্য) যুক্ত করে ১৭ সংখ্যার নম্বর বানান। যেমন: জন্ম নিবন্ধন যাচাই 19850915454107351

ধাপ ৩: জন্ম তারিখ প্রদান

২য় ঘরে আপনার জন্ম সনদ অনুসারে সঠিক জন্ম তারিখটি লিখুন। এই ঘরে ক্লিক করলেই একটি ক্যালেন্ডার অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনার জন্ম তারিখের দিন, মাস ও বছর সিলেক্ট করুন।

অথবা, আপনি চাইলে সরাসরি জন্ম তারিখটি লিখতে পারেন। সেক্ষেত্রে YYYY-MM-DD (বছর-মাস-দিন) ফরম্যাটে জন্ম তারিখটি লিখুন।

select birthday

ধাপ ৪: ক্যাপচা পূরণ করুন 

জন্ম সনদ যাচাই পেজে হিউম্যান ভেরিফিকেশন এর জন্য একটি ক্যাপচার সমাধান করতে হয়। এই ওয়েবপেজের ক্যাপচাগুলো সাধারণত গানিতিক সমস্যা আকারে যোগ/বিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। উপরের ছবিতে থাকা গাণিতিক সমস্যা/ অংকটির সমাধান করে ফলাফলটি নিচের ‘The answer is’ ঘরে লিখতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, নিচের ছবিটিতে গাণিতিক সমস্যা হিসেবে ’17+37=?’ দেওয়া আছে। এখানে 17 এবং 37 একসাথে যোগ করে ‘The answer is’ ঘরে ফলাফল 54 লিখুন।

ধাপ ৫: জন্ম নিবন্ধন Search করুন

জন্ম নিবন্ধন নম্বর, জন্ম তারিখ ও ক্যাপচা পূরণ করা হলে, নিচের Search বাটনে ক্লিক করুন। আপনার দেওয়া সকল তথ্য সঠিক হলে সার্ভারে থাকা নিবন্ধনের তথ্য গুলো দেখতে পাবেন। তবে উপরোক্ত তথ্যগুলো সঠিক না হলে কিংবা জন্ম নিবন্ধন টি অনলাইন/ডিজিটাল করা না থাকলে No Result Found লেখা দেখতে পাবেন।

সঠিক তথ্য ইনপুট করার পরেও যদি কোন তথ্য না দেখার তা হলে ধরে নিতে হবে আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করা নেই। সেটি অনলাইন করার জন্য আপনার স্থানীয় নিবন্ধক কার্যালয়ে (ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা) যোগাযোগ করতে হবে। তাছাড়া আপনি অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেবেন।

ধাপ ৬: জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন কপির তথ্যাবলী

অনলাইনে জন্ম সনদ চেক করার পর সার্ভারে থাকা নিবন্ধনের তথ্য গুলো দেখানো হয়। জন্ম নিবন্ধনের একটি সার্ভার কপিতে যে সকল তথ্যগুলো থাকে সেগুলো হলো:

  • নিবন্ধনকারীর জন্ম নিবন্ধন নম্বর;
  • নিবন্ধনকারীর জন্ম তারিখ;
  • নিবন্ধনকারীর লিঙ্গ;
  • নিবন্ধনকারীর ও তার পিতা-মাতার নাম বাংলায় ও ইংরেজিতে;
  • জন্ম সনদটি রেজিস্ট্রেশন এর তারিখ ও ইস্যু করার তারিখ;
  • ইউনিক জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য আলাদা আলাদা QR Code;
  • ঠিকানার সম্পূর্ণ তথ্য;
  • সার্ভার কর্তৃক স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত  অন্যান্য তথ্য;
  • সরকারি লোগো ও ডিজিটাল সিলমোহর ইত্যাদি।

এখানে একটি অরিজিনাল বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া জন্ম সনদের মতো, চেয়ারম্যান/ইউপি সচিবের স্বাক্ষর থাকবে না।

জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড

ধাপ ৭: জন্ম সনদের অনলাইন কপি প্রিন্ট

জন্ম নিবন্ধন যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর প্রাপ্ত অনলাইন কপিটি সার্ভার থেকে প্রিন্ট করে সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। এই অনলাইন কমিটি প্রিন্ট করতে সংশ্লিষ্ট ওয়েবপেজে থেকেই আপনার কিবোর্ডের Ctrl + P একসাথে চাপুন।

এবার আপনার কম্পিউটার স্ক্রিনে একটি প্রিন্ট ডায়ালগ বক্স আসবে। এখান থেকে সার্ভার কপিটি প্রিন্ট করার জন্য আপনি Print Destination, Pages, Layout, Color এবং More settings অপশনে গিয়ে Print Preference প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করতে পারবেন। কোন কিছু পরিবর্তন করতে না চাইলে এখান থেকে নিচের ‘Print’ বাটনে ক্লিক করলে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত প্রিন্টার থেকে সার্ভার কপিটি প্রিন্ট করা যাবে।

শুধুমাত্র কম্পিউটারের সাথে প্রিন্টার সংযুক্ত থাকলেই প্রিন্ট করতে পারবেন। অন্যথায়, আপনার ডিভাইসে এই ফাইলটির পিডিএফ কপি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড

জন্ম সনদ সার্ভার থেকে চেক করার পর জন্ম নিবন্ধন যাচাই কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনার কম্পিউটারের সাথে প্রিন্টার সংযুক্ত না থাকলে যাচাই কপিটি ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে পারেন।

এর জন্য, কিবোর্ড থেকে  Ctrl + P একসাথে চাপুন। এবার Print Preference ওপেন হবে। সার্ভার কপিটির পাশে ‘Destination’ এর Microsoft Print to PDF অপশনটি পরিবর্তন করে Save to PDF অপশন সিলেক্ট করুন। তারপর নিচের Print অপশনের পরিবর্তে Save অপশন দেখতে পাবেন। এখান থেকে Save বাটনে ক্লিক করে আপনার পছন্দমত কম্পিউটারের ফাইলে PDF কপিটি সংরক্ষণ করতে পারবেন।

নতুন জন্ম নিবন্ধনঅনলাইনে আবেদন
সংশোধনজন্ম নিবন্ধন সংশোধন
ডাউনলোডযাচাই কপি ডাউনলোড

Similar Posts

3 Comments

  1. This is one of the best posts I’ve read in quite a while. Nice work.

  2. This is a really nice page. It’s very engaging and well organized. I’ll check back for more posts like this one.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *